SATT ACADEMY

New to Satt Academy? Create an account


or

Log in with Google Account

নবম-দশম শ্রেণি (মাধ্যমিক) - পৌরনীতি ও নাগরিকতা - পৌরনীতি ও নাগরিকতা | NCTB BOOK

পরিবারের সদস্যদের সুন্দর ও নিরাপদ জীবন গড়ে তোলার জন্য পরিবার বহুবিধ কাজ করে । পরিবার সাধারণত যেসব কার্য সম্পাদন করে, সেগুলো নিম্নরূপ-

১. জৈবিক কাজ : আমাদের মা-বাবা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার ফলেই আমরা জন্মগ্রহণ করেছি এবং তাদের দ্বারা লালিত-পালিত হচ্ছি । অতএব, সন্তান জন্মদান ও লালন-পালন করা পরিবারের অন্যতম কাজ । পরিবারের এ ধরনের কাজকে জৈবিক কাজ বলা হয় ।

২. শিক্ষামূলক কাজ : আমাদের মধ্যে অনেকে বিদ্যালয়ে যাওয়ার পূর্বেই পরিবারে বর্ণমালার সাথে পরিচিত হই । তাছাড়া মা-বাবা, ভাই-বোন ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের পারস্পরিক সহায়তায় সততা, শিষ্টাচার, উদারতা, নিয়মানুবর্তিতা ইত্যাদি মানবিক গুণাবলি শিক্ষা লাভের প্রথম সুযোগ পরিবারেই সৃষ্টি হয়। এগুলো পরিবারের শিক্ষামূলক কাজ। আর পরিবারে শিশুর প্রাথমিক শিক্ষা শুরু হয় বলে পরিবারকে শাশ্বত বিদ্যালয় বা জীবনের প্রথম পাঠশালা বলা হয় ।

৩. অর্থনৈতিক কাজ : পরিবারের সদস্যদের খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসা প্রভৃতি চাহিদা পূরণের দায়িত্ব পরিবারের । পরিবারের সদস্যরা বিভিন্নভাবে অর্থ উপার্জনের মাধ্যমে এসব চাহিদা মিটিয়ে থাকে । পরিবারকে কেন্দ্র করে কুটির শিল্প, মৎস্য চাষ, কৃষিকাজ, পশু পালন ইত্যাদি অর্থনৈতিক কাজ সম্পাদিত হয় । বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির অভূতপূর্ব উন্নতির ফলে পরিবারের সাথে সংশ্লিষ্ট কাজের জায়গাগুলো অনেক ক্ষেত্রে পরিবর্তিত হয়েছে এবং নতুন নতুন কাজের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে হ্রাস পেয়েছে । তবে আজও পরিবার আমাদের সকল প্রকার অর্থনৈতিক চাহিদা পূরণ করছে ।

৪. রাজনৈতিক কাজ : পরিবারে সাধারণত মা-বাবা কিংবা বড় ভাই-বোন অভিভাবকের ভূমিকা পালন করে। আমরা ছোটরা তাঁদের আদেশ-নির্দেশ মেনে চলি। তারাও আমাদের অধিকার রক্ষায় কাজ করেন । বুদ্ধি, বিবেক ও আত্মসংযমের শিক্ষা দেন যা আমাদের সুনাগরিক হতে সাহায্য করে । এভাবে পারিবারিক শিক্ষা ও নিয়ম মেনে চলার মাধ্যমে পরিবারেই শিশুর রাজনৈতিক শিক্ষা শুরু হয়। এ শিক্ষা পরবর্তীকালে রাষ্ট্রীয় জীবনে কাজে লাগে । এছাড়া বড়দের রাজনৈতিক আলোচনা শুনে ও সে আলোচনায় অংশগ্রহণ করে আমরা দেশের রাজনীতি সম্পর্কে সচেতন হয়ে উঠি ।

৫. মনস্তাত্ত্বিক কাজ : পরিবার মায়া-মমতা, স্নেহ-ভালোবাসা দিয়ে পরিবারের সদস্যদের মানসিক চাহিদা পূরণ করে । নিজের সুখ-দুঃখ, আনন্দ-বেদনা পরিবারের অন্যান্য সদস্যের সাথে ভাগাভাগি করে প্রশান্তি লাভ করা যায় । যেমন- কোনো বিষয়ে মন খারাপ হলে মা-বাবা, ভাই-বোনদের সাথে আলাপ-আলোচনা করে তার সমাধান করা যায়। এ ধরনের আলোচনা মানসিক শান্তি-ক্লান্তি মুছে দিতে সাহায্য করে। তাছাড়া পরিবার থেকে শিশু উদারতা, সহনশীলতা, সহমর্মিতা প্রভৃতি গুণগুলো অর্জন করে যা তাদের মানসিক দিককে সমৃদ্ধ করে ।

৬. বিনোদনমূলক কাজ : পরিবারের সদস্যদের সাথে গল্প-গুজব, হাসি-ঠাট্টা, গান-বাজনা, টিভি দেখা, বিভিন্ন জায়গায় বেড়াতে যাওয়া ইত্যাদির মাধ্যমে আমরা বিনোদন লাভ করি। বর্তমানে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উন্নয়নের ফলে পরিবারের উল্লেখিত কাজগুলো কিছুটা হ্রাস পেলেও সদস্যদের সর্বাধিক কল্যাণ সাধনে পরিবারের এসব কাজের গুরুত্ব অপরিসীম।

Content updated By